ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য। খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।

ইসলামে কেবল আধ্যাত্বিক দিকের নয়, দৈহিক তথা স্বাস্হ্যগত উন্নতির পথ নির্দেশনাও রয়েছে। আল্লাহর অগনিত নিয়ামত রাশীর মধ্যে সুস্বাস্হও একটি। পবিত্র কোরআন ও হাদীসকে অনুসরণ ও অনুকরণ করলে আমরা শারিরীক ও আত্মার কল্যাণ ও সুস্বাস্হও পেতে পারি।

বর্তমানে সারা বিশ্বে স্বীকৃত স্বাস্হ্যে সংজ্ঞা হচ্ছে- মানুষের শারিরীক, মানুসিক ও সামাজিক ও আত্মার সুস্হতাকেই স্বাস্হ বলা হয়, শুধুমাত্র রোগ শোকের অনুপস্হিতিই স্বাস্হ্য নয়, যাহা কোন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত জীবন যাপনে সমর্থ্য করে।


এ সংজ্ঞায় যে পয়েন্টগুলি বলা হয়েছে, যেমন শারিরীক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মার সুস্হতা এবং রোগ, শোকের অনুপস্হিতি অর্জন করতে হলে কোরআন-হাদীসের অনুসরণ ছাড়া বিকল্প নেই। যদিও কোরআন হাদীস স্বাস্হ্য বিজ্ঞানের বই নয় কিন্তু কোরআান ও হাদীসের অনুসরণ দ্বারাই সুস্বাস্হ্য অর্জন সম্ভব বলে কোরআন ও হাদীসকে প্রতিরোধ মূলক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও বলা যেতে পারে। আর রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্হা উত্তম।


কোরআন যেমন আত্মিক রোগসমূহের ঔষধ, তেমনি বাহ্যিক রোগসমূহের অমোঘ ব্যবস্হাপত্র। অনেক হাদীস থেকে স্বয়ং রসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর "ক্বুল আউযু" শীর্ষক সূরা সমুহ পাঠ করে ফুঁ দেয়ার প্রমান পাওয়া যায়। সাহাবী ও তাবেয়ীগণও কোরআনের আয়াত দ্বারা রোগীর চিকিৎসা করেছেন বলে প্রমানিত আছে।


আজ থেকে ১৪০০ বৎসর আগেই ইসলাম বলে দিয়েছে -আপন পোশাক ও দেহকে বাহ্যিক অপবিত্রতা থেকে পবিত্র রাখুন এবং অন্তর ও মনকে ভ্রান্ত বিশ্বাস ও চিন্তাধারা থেকে এবং কুচরিত্রতা থেকে মুক্ত রাখুন।হাদীসে বলা হয়েছে-"পবিত্রতা  ঈমানের অঙ্গ।" নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা ক্ষমাপ্রার্থী ও পবিত্র ব্যক্তিদের ভাল বাসেন।-সূরা বাক্বরা-০২ঃ২২২।


ধুমপান, মাদকদ্রব্য ও নেশা উৎপাদনকারী দ্রব্যের ক্ষতি সম্পর্কে মহা নবী (সাঃ) অবগত ছিলেন, তাই মহানবী (সাঃ) বলেন- "যাবতীয় নেশার বস্তু হারাম।" হযরত উসমান (রাঃ) বলেন, মদ পান করলে জ্ঞান হ্রাস পায়।


হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, "পেটকে জানোয়ারের কবর বানিও না অর্থাৎ সকাল সন্ধ্যা শুধু গোস্ত খেওনা, গোস্ত  ছাড়া আল্লাহ প্রদত্ত অন্যান্য নিয়ামত দ্বারাও উপকারিতা লাভ কর।" দাড়ীয়ে প্রসাব করলে শরীরের গুরুত্তপূর্ণ ১টি উপাদান এলভুমিন চলে যায়, যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ইসলাম দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাকে নিষেধ করেছেন।


খতনা অনেক রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি দেয় এবং ইসলাম খতনা করানোর নির্দেশনা দিয়েছে। যৌনরোগ ও এইডস বিস্তার লাভের অন্যতম কারণ অবৈধ যৌন মিলন,ব্যাভিচার, সমকামীতার মত গর্হিত জীবন যাপন। আল্লাহ তা'আলা অবাধ যৌনমিলনকে হারাম ঘোষনা করেছেন।


হুযুর (সাঃ)বলেছেন, "ভোরে উঠো, কেননা এতে বড় সওয়াব ও উপকার রয়েছে। ইসলাম স্বাস্হ্যবান হওয়াকে উৎসাহিত করেছে। হাদীসের বানী- " বলশালী মুমিন দূর্বল মুমিন অপেক্ষা ভাল এবং আল্লাহর কাছে বেশী প্রিয়।"


ইসলামের বিধি - বিধানগুলো যুগোপযুগী ও বিজ্ঞানময় স্বাস্হ্য সম্মত  এবং এগুলো মেনে চলার ভেতর দিয়ে মানুষের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক বিভিন্ন অসুস্হতা প্রতিরোধ হয় অর্থাৎ সুস্বাস্হ্য অর্জন সম্ভব হয়।


আসুন আমরা ইসলামকে যথাযথভাবে অনুসরণ করি এবং সুস্হ ও সুন্দর জীবন যাপনে ব্রতী হই। আল্লাহ পাক আমাদেরকে ইসলামী জীবন যাপনের জন্য তাওফীক দান করুন। -আমীন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন