আত্মার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক। খতীব, আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।

আত্মীয়তা ইসলামী সমাজ ব্যবস্হার অন্যতম দিক। এর মাধ্যমে ইসলাম পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করতে চায়। আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। অধিকাংশ সমস্যার মূল হচ্ছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা না করা বা ছিন্ন করা।


বাংলায় আত্মা থেকে আত্মীয়তা শব্দের উৎপত্তি। তাই আত্মার সাথে আত্মীয়তার নিবীড় সম্পর্ক রয়েছে। রক্তের সম্পর্ক  থেকেই আত্মীয়তার জন্ম। আত্মীয়তা দু'ধরনের হয়ে থাকে, নিকটাত্মীয় এবং দূরাত্মীয়। আত্মীয় যত নিকটবর্তী তার অধিকার ও ততবেশী এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করাও তত বড় গুনাহ্।


আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ফাসিক ও ফাসদ সৃস্টিকারীদের বৈশিষ্ট। এ ব্যাপারে সূরা বাক্বারার ২৭ নং আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা পরিষ্কার ভাবে বলেছেন যে, "যারা আল্লহর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যে আত্মীয়তার সম্পর্ক অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তা ছিন্ন করে এবং যারা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে, তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।"


আত্মীয়তার মর্যাদা, অধিকার এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যথেষ্ট হাদীস রয়েছে। এক হাদীসে আছে, আল্লাহ তা'আলা যেসব গুনাহের শাস্তি ইহকালেও দেন এবং পরকালেও দেন, সে গুলোর মধ্যে নিপীড়ন ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার সমান কোন গুনাহ-ই নেই। -(আবু দাউদ, তিরমিযী)।


বিভিন্ন কারণে মানুষ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকে। যেমন, বহু মুসলমানের কাছে আত্মীয়তার অধিকার ও গুরুত্ব জানা না থাকার কারণে। অনেক কর্মব্যস্ত লোক ব্যস্ততার কারণে। অনেকেই নিজের স্বার্থের গন্ডির বাইরে আত্মীয়- স্বজনের খোঁজ খবর নিতে আগ্রহী নয়।


বিভিন্ন উপায়ে আত্মীয়তার সম্পর্ককে জোরদার করা যায়। যেমন, এক আত্মীয় আরেক আত্মীয়ের সাথে সকল বিষয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে আত্মীয়তার সম্পর্ককে মজবুত করা যায়। ত্যাগ ও ধৈর্যের মাধ্যমে এবং উপহার বিনিময়ের মাধ্যমে ও আত্মীয়দের প্রতি সৎকাজের আদেশ অসৎ কাজের প্রতিরোধের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক জোরদার করা যায়।


আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে আত্মীয়তার সুসম্পর্ক বজায় রাখার তাওফীক দিন। আমীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন