থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন

পশ্চিমা সংস্কৃতি নামের অপসংস্কৃতি হচ্ছে কথিত 'থার্টি ফার্স্ট নাইট'। যা মুসলিম সমাজে অসার, অনর্থক, বেহুদা ও শয়তানী কাজ হিসেবেই স্বীকৃত।


মূলত ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করার জন্য বিদায়ী বছরের শেষ রাত ও নতুন বছরের প্রথম প্রহরে এই উৎসব উদযাপন করা হয়। আসলে এটি কোনো মুসলিম ঐতিহ্য বা সংস্কৃতির অংশ নয়।


রাসূল (সাঃ) বলেছেন- "যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করলো সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত"।-(আহমদ, আবু দাউদ, মিশকাত)।


কথিত বর্ষবরণের এই রাতে নারী-পুরুষদের অবাধ-মেলামেশার সুযোগ করে দেয়া হয়। উৎসবের নামে আতশ ও পটকাবাজি, ফ্যাশন শো, ফায়ার প্লে, ট্যাটো বা উল্কা অংকন, কনসার্ট, বেহুদাপনা, মাদকসেবন, উচ্ছৃঙ্খলতা, বেহায়াপনা, পথে পথে নারী- পুরুষের উদ্দাম নৃত্য শুধু ইসলামী ঐতিহ্য নয়, বরং কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।  


থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন সম্পুর্নরূপে বিজাতীয় সাংস্কৃতি। ইসলাম এটি কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন- " মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর"।-(সূরা আত তাহরীম-৬৬ঃ৬)।



মূলত হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্মের ৪৬ বছর আগে রোমানরা Janus নামে এক ঈশ্বরের পূজা শুরু করে। যাকে তারা God of beginnings বা শুরুর স্রষ্টা রূপে বিশ্বাস করত। বস্তুত, তারা বহু স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিল। তার মধ্যে Janus ছিল অন্যতম। তাদের বিশ্বাস ছিল Janus অতীত-ভবিষ্যাতের সব কিছুই জানেন এবং ভবিষ্যৎ- নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখেন। এই Janus- এর নাম অনুসারে বছরের প্রথম মাসের নাম দেয়া হয় January. এই মাসে ঘটা করে তাদের এই ঈশ্বরকে খুশী করে যেন Janus তাদেরকে পুরো বছর মঙ্গলের  মধ্যে রাখেন। মূলত এই Janus পূজা থেকে ইংরেজি বর্ষবরণ সূচনা।


বর্ষবরণের নামে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন ও বেলেল্লাপনা ইসলামী আকিদা, বোধ- বিশ্বাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী।  


তাই ইংরেজি সালের শেষ রাতে তরুণ-তরুণীর অবাধ মেলামেশা, বেহায়াপনা, উদোম নর্তন-কুর্দন, নেশাগ্রস্ততা, অহেতুক অপচয় ও গান- বাজনা সম্পূর্ণ হারাম। ইসলাম এসব বেহুদাপনাকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে।


আল্লাহ তা'আলা বলেন- "আপনি বলে দিনঃ আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন"। -(সূরা আল আরাফ-৭ঃ৩৩) 


মূলত থার্টি ফার্স্ট নাইট বা বর্ষবরণের নামে উন্মত্ততার অনুমোদন ইসলামে নেই বরং এসব বিজাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। তাই মুমিন হিসেবে আমাদের কর্তব্য থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনসহ এ ধরনের সব বেহুদা কাজ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান  করুন। আমীন।
লেখকঃ খতীব, আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা। 
                                                                                                                                                                      

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন