লাইলাতুল ক্বদরকে শবে ক্বদর ও বলা হয়। শব ফারসি শব্দ এর অর্থ রাত, রজনী। আর ক্বদর আরবি এর অর্থ বড়ত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা ও পরিমাণ। শবে ক্বদর হচ্ছে শ্রেষ্ঠ রজনী বা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের রজনী। ক্বদরের আরেক অর্থ তাকদির, ফয়সালা। লাইলাতুল ক্বদর অর্থ তাকদীর নির্ধারণ বা ফয়সালা করার রাত।
কয়েকটি কারণে এ রাত্রির নাম শবে ক্বদর বা লাইলাতুল ক্বদর রাখা হয়েছে -
১. এ রাতটি মহত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ রাত। এ রাতে এবাদত বন্দেগীর কল্যাণে একজন নগন্য মানুষ ও আল্লাহ্ তা'আলার দৃষ্টিতে মর্যাদা সম্পন্ন হতে পারে।
যারা এ রাত্রির আগে আল্লাহ্ পাকের নিকট গুনাহের কারণে ঘৃণিত ছিল, তারা যখন এ রাত্রিতে কান্নাকাটি ও তাওবা করে গুনাহ মাফ করিয়ে নেয়, আল্লাহ্ তা'আলা তখন তাদেরকে নিজের প্রিয় ব্যক্তি রূপে গ্রহণ করে সম্মাণিত করেন।
২. এ রাতটি হচ্ছে তাকদীর নির্ধারণ বা ফয়সালা করার রাত। এ বৎসর এ জগতকে কিভাবে চালানো হবে, ফেরেশতারা কে, কি কাজ করবেন, কত প্রাণী এ বৎসর জন্ম নেবে এবং কত প্রাণী এ বৎসর মারা যাবে, রিযিক কাকে কত দেয়া হবে। এ সব কিছু আল্লাহ্ তা'আলা এ রাত্রিতে নির্দিষ্ট করে দেন।
৩. এ রাতটি হচ্ছে সম্মান প্রদর্শন করার রাত। এ রাত্রিতে ফেরেশতাগণ এ জগতে এসে বিশিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ বুজর্গাণে দ্বীনের হাতে হাত মিলান, তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করেন।
৪. এ রাতটি হচ্ছে সম্মানিত রাত। আল্লাহ্ তা'আলা এ রাত্রিতে মহা সম্মানিত রাসুল (সাঃ) এর মাধ্যমে মহা সম্মানিত কুরআনকে সম্মানিত উম্মতের জন্য অবতীর্ণ করেছেন।
৫. এ রাতটি হচ্ছে স্হান সংকীর্ণ হওয়ার রাত। এ রাত্রিতে আকাশ থেকে জিবরাইল (আঃ) সহ এত বেশী ফেরেশতা জমীনে অবতরণ করেন যে, তাঁদের মধ্যে অনেক ফেরেশতা মাটিতে দাঁড়ানোর স্হান পান না অর্থাৎ তাঁদের জন্য স্হান সংকীর্ণ হয়ে যায়।
লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদর উম্মাতে মুহাম্মাদীয়ার বিশেষত্ব সমুহের মধ্যে অন্যতম। এ রাতে ইবাদত করলে এক হাজার মাস ইবাদতের চাইতেও বেশী সাওয়াব পাওয়া যায়।
হে আল্লাহ, তুমিইতো ক্ষমাকারী, ক্ষমাকে পছন্দ কর। সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা কর। আমীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন