পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফযিলত। খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।

রমজান মাস মানবজাতির জন্য আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে দেয়া এক বিরাট উপহার। রমজানুল মুবারক! মুমিন-মুসলিমদের জীবনে এক প্রিয় -প্রার্থনীয় মৌসুম। রহমত, মাগফিরাত আর মুক্তির অবিরাম বারি বর্ষণে সজীব -সুন্দর যার প্রতিটি ক্ষণ অঙ্গন।


মূলতঃ রমজান মাস হলো বছরের একটি অনিবার্য প্রশিক্ষণ কাল। আগামী এগারো মাস যাতে বান্দা পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ তা'আলার মর্জিতে চলতে পারে, জীবনের সকল ক্ষেত্রে যাতে মেনে চলতে পারে তাঁরই বিধান সেই প্রশিক্ষণই দেয়া হয় এই মাসে।


রমজান মাসে আল্লাহ তা'আলার ইবাদাতে লিপ্ত থাকবে। এগারো মাসে যেসব গুনাহ হয়েছে সেগুলোর ক্ষমা করিয়ে নিবে। পবিত্র করবে অন্তরকে সমস্ত কালিমা থেকে। এ মাসে আল্লাহ তা'আলা নিজ মেহেরবানীতে গুনাহ সমূহকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দেন। মানুষ যেন এক নব জীবন লাভ করে।


গুনাহের কারণে রোযা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোযার সওয়াব থেকে বঞ্চিত হতে হয়। বিধায়  সুদ খাওয়া, ঘুস খাওয়াসহ সব ধরণের হারাম আমদানী ছেড়ে দিতে হবে। হালাল রিজিকের ব্যবস্থা করে তা দ্বারা ইফতারি খানা ও সেহরির ব্যবস্থা করতে হবে।


বেশি বেশি কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতে হবে। এ মাসে তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বেশি বেশি কালিমায়ে ত্বইয়্যিবা পড়তে হবে এবং আল্লাহ তা'আলার দরবারে বেশি বেশি জান্নাত কামনা করতে হবে। এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করতে হবে।


ইফতার ও সেহরির ব্যাপারে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এবং তারাবীহ নামাজের হেফাজতের জন্য এমন ইমামের পিছনে তারাবীহ পড়তে হবে যিনি সহীহ ভাবে স্পষ্ট উচ্চারণে কুরআন শরীফ পড়ে থাকেন।


এ মাসেই রয়েছে এমন একটি রাত যা সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। এ মাসে যে ব্যক্তি কোন একটা কল্যাণমূলক কাজ করবে, সে অন্য মাসে একটা ফরজ আদায়কারীর মতো সাওয়াব পাবে। এটি একটি মর্যাদাপূর্ণ ও বরকতময় মাস।


এ মাসে যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে এবং সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। অধীনস্ত ব্যক্তির কাজ রমজানে হালকা করে দিলে, আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং দোযখ থেকে রেহাই দেবেন।



রমজান মাসেই মানবজাতির হেদায়েতের উৎসস্বরূপ বিশ্বস্রষ্টার অপার করুণা ও অফুরন্ত ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে পবিত্র আল কুরআন, যা অন্ধকার যুগের যাবতীয় জুলুম, নির্যাতন এবং অন্যায় থেকে মুক্ত করে একটি সত্য ও আলোর পথের দিকে আহ্বান  জানায়।


রমজান হচ্ছে তাওবা ও ক্ষমা পাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। রমজান হচ্ছে ইখলাস অর্জনের উপযুক্ত সময়। রমজান হচ্ছে সবর ও সংযমের মাস, আর সবরের পুরষ্কার হচ্ছে জান্নাত।



রমজান মাস মানবজাতির জন্য মহান আল্লাহ তা'আলার প্রদত্ত এক মহা নেয়ামত। এই নেয়ামতকে কাজে লাগিয়ে সঠিক ফায়দা হাসিলের জন্য প্রযোজন রমজানের হক যথাযথভাবে আদায় করা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে পরিপূর্ণ ইখলাস ও চেতনা সহকারে রমজান উদযাপনের তাওফীক দিন। আমীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন