আল্লাহ তা'আলা বনি আদমকে সৃষ্টি করেছেন। আর তাদের জন্য জীবন চলার বিধিবিধান নির্ধারণ করেছেন। যাতে তারা এসব বিধিবিধান মেনে চলে সুন্দর থেকে সুন্দরতম জীবন গড়তে পারে। আর এসব বিধিবিধানের মধ্যে একটি হচ্ছে যাকাত আদায় করা।
যাকাত আরবি শব্দ। এর অর্থ পবিত্র হওয়া ও বৃদ্ধি পাওয়া। পরিভাষায় শরিয়ত নির্ধারিত পন্হায় সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য শরিয়তসম্মত আটটি খাতের যে কোন একটিতে ব্যয় করাকে যাকাত বলে।
যাকাত হচ্ছে ইসলামের পাঁচ রুকনের মধ্যে একটি গুরুপূর্ণ রুকন। সমাজ থেকে দরিদ্রতা দূরীকরণের লক্ষে আল্লাহ তা'আলা মুসলমানদের ওপর যাকাত ফরজ করেছেন। এটি হচ্ছে ধনীদের সম্পদে দরিদ্রদের নির্ধারিত অধিকার।
যাকাত কোনো ভিক্ষা বা দান নয়। যাকাতদাতা গ্রহীতাদের প্রতি কোনো অনুগ্রহ করেনি বরং যাকাত আদায় করে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেল। যাকাতদাতার সম্পদে গ্রহীতাদের হক সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন," তাদের ধন-সম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে।" -সূরা যারিয়াত-১৯।
ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কোরআনুল কারিমে যখনই সলাত আদায়ের জন্য আল্লাহর আদেশ বর্ণিত হয়েছে, তার সঙ্গে সঙ্গে যাকাত আদায়েরও আদেশ এসেছে।
যাকাত সম্পদকে হ্রাস করে না; বরং বৃদ্ধি করে। আর যাকাত মালকে পবিত্র ও বরকতময় করে। যাকাত আত্মার পবিত্রতাও সাধন করে এবং কৃপণতা থেকে মুক্ত করে উদারতা ও বদান্যতায় পরিপূর্ণ করে। যাকাত দরিদ্রিতা দূরীভূত করে এবং তা ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা সৃষ্টি করার একটি মাধ্যম।
তাই প্রতি বছর ইসলামের নির্ধারিত নীতি অনুযায়ী যাকাতের হকদারদের মধ্যে যথাযথভাবে যাকাত দান করা আমাদের কর্তব্য। নিজ ইচ্ছামতো বন্টন করা কারও জন্য বৈধ নয়। যাকাত কোন কোন খাতে ব্যয় করতে হবে তা আল্লাহ তা'আলা নিজেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
মুসলমানরা যদি যাকাত আদায়ে আগ্রহী হতো তবে তাদের মাঝে আর ক্ষুধার্ত, গরিব ও বঞ্চিত থাকতো না এবং বিপদের সময় অমুসলিমদের প্রতিও মুখাপেক্ষী হতে হতো না। মুসলিম সমাজ সূখে-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করত এবং এর মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হতো। আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে তাঁর হুকুম যথাযথভাবে পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। -আমীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন