করোনায় কুরবানী একটি পরীক্ষা। খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।

করোনা বা মহামারী কালীন কুরবানী করা মহান আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে একটি মহাপরীক্ষা। কুরবানীর মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে যে, আমাদের সব কিছুই একমাত্র আল্লাহ তা'আলার জন্য। মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন- "আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহ তা'আলারই জন্য"। -(সূরা আল আনআম -০৬ঃ১৬২)।



মানুষ জীবনের প্রতিটি কাজে ও প্রতিটি অবস্থায় একথা মনে রাখবে যে, আমার এবং সমগ্র বিশ্বের একজন পালনকর্তা আছেন, আমি তাঁর দাস এবং সর্বদা তাঁর দৃষ্টিতে রয়েছি। আল্লাহ তা'আলা বলেন-" অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন"। -(সূরা কাওসার-১০৮ঃ০২)।



নামায শারীরিক এবাদতসমুহের মধ্যে সর্ববৃহৎ এবাদত এবং কুরবানী আর্থিক এবাদতসমুহের মধ্যে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বের অধিকারী।




ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানী করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) প্রমাণ করলেন তাঁর পবিত্র অন্তঃ করণে আল্লাহতা'আলার প্রেম ভিন্ন অন্য কোন প্রেম নেই। পরীক্ষায় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উত্তীর্ণ হয়ে ছিলেন। আল্লাহতা'আলা বলেন- "নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা"। - সূরা আস সাফফাত-৩৭ঃ১০৬)।




আল্লাহ তা'আলার কোন বান্দা যখন আল্লাহ তা'আলার আদেশের সামনে নতশির হয়ে নিজের সমস্ত ভাবাবেগেকে কুরবান করতে উদ্যত হয়ে যায়, তখন আল্লাহ তা'আলা পরিশেষে   তাকে পার্থিব কষ্ট থেকেও বাঁচিয়ে রাখেন এবং পরকালের সওয়াবও তার আমলনামায় লিখে দেন। কুরবানীর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য ও ভালোবাসা অর্জন হয়।




সামর্থ্যবান নর-নারীর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কুরবানী বৎসরে কেবল একবার আদায় করতে হয়। যারা এই করোনা ভাইরাস বা মহামারীতে নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজে কুরবানীর ব্যবস্হা করতে পারছেন না, তিনিও অন্য কারো মাধ্যমে দেশের অন্য কোথাও দায়িত্ব দিয়েও কুরবানীর ব্যবস্হা করতে পারেন। মহানবী (সাঃ) বলেন- " তোমরা আনন্দিত মনে কুরবানী কর"। - (ইবনে মাজাহ)। কুরবানী করে খুশী থাকো।




হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেন- যে ব্যক্তি সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করলনা, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটও না আসে। - ( মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, বায়হাকী, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ)।




মরণ সকলের অনিবার্য। আল্লাহ তা'আলার সামনে আমাদের সকল কর্মের হিসেব দিতে হবে। তাই আমাদের কর্ম যেন ভালো হয় মন যেন ইসলামের ভাবধারায় গঠিত হয়। কুরবানী সে শিক্ষাই দেয়।




মরণ জীবনের চরম এবং পরম লক্ষ্যই হলো আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভ। তাঁর হুকুম পালন করতে গিয়ে জীবন দিতে হলেও তা  সফল এবং বাঁচলেও সফল।




আল্লাহ তা'আলা মুসলিম উম্মাহকে করোনা ভাইরাস বা মহামারীর সময় যথাযথ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুরবানী করে তাঁর নৈকট্য ও সন্তুষ্ট লাভের তাওফীক দান করুন।
                                         


            

              

      

                                                                                                                                                  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন