ইহ্সান বা ফানা-ফিল-ইসলাম

ইহ্সান কুরআন ও হাদীসের একটি পরিভাষা। ইহ্সান অর্থ সুন্দর করা, ভালোভাবে করা, কোন কিছুকে উন্নত করা, কোন কাজ সুষ্ঠুভাবে, নিষ্ঠা ও নিপুণতার সাথে, সর্বোত্তম পন্থায় সম্পন্ন করা,  সদ্ব্যবহার করা, অর্থাৎ কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও ইবাদতকে সুন্দর ও ভালো করা। ইবাদতের চুড়ান্ত পর্যায় হলো ইহ্সান। 


ইহ্সান শুধু কর্তব্য পালনের নাম নয়, এটি হচ্ছে হৃদয় থেকে উৎসাহিত ভালোবাসার এক অনুপম প্রয়সের নাম। ইহ্সান হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর দ্বীনের সাথে মনের গভীরতম ভালোবাসা, দুচ্ছেদ্য বন্ধন ও আত্মহারা প্রেম-পাগল অনুভূতির নাম, যা একজন মুসলমানকে 'ফানা-ফিল-ইসলাম' -ইসলামের জন্যে আত্ম-উৎসর্গীকৃত এবং নিবেদিত প্রাণ হিসেবে গড়ে তুলে। 



আমিত্ব ও অহংকার বিসর্জন দেয়া ও নফসের গোলামী থেকে মুক্ত হওয়া ইহ্সান অর্জনের পূর্ব শর্ত। আল্লাহ তা'আলা ইহ্সানকারীদের সঙ্গে আছেন। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন-"নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা ইহ্সানকারীদের সাথে আছেন।" -(সূরা আনকাবুত-২৯ঃ৬৯)।


কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা ইসলামী নৈতিকতার চারটি ক্রমিক পর্যায় নির্ধারণ করেছে। পর্যায়গুলো হচ্ছে- ১. ঈমান ২. ইসলাম ৩. তাকওয়া এবং ৪. ইহ্সান। এ ৪টি পর্যায় ধারা পরস্পরায় পরস্পরের সাথে সুসংঘবদ্ধ হয়ে আছে। একটি থেকে অপরটিকে বিচ্ছিন্ন করা যায়না। একটির সাথে অপরটির সম্পর্ক অচ্ছেদ্য এবং অবিভাজ্য। 

 
পবিত্র কুরআনে যেখানেই ঈমানের প্রসঙ্গ এসেছে, সেখানেই 'আমলে সালেহ' করতে বলেছেন। ইসলাম অর্থ- 'আত্ম-সমর্পণ' মুখে ঈমানের দাবী করে 'আমি  মুসলমান' এ ঘোষণা দিলে ঈমানের দাবী পূরণ হয়না। আল্লাহর আইন-বিধানের কাছে পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণকারীকেই বলা হয় মুসলমান। 


ঈমান, ইসলাম ও তাকওয়ার তিন স্তরে মানুষের মধ্যে বহুমাত্রিক গুণাবলীর সমাহার ও সমন্বয়ের মাধ্যমে চতুর্থ পর্যায়ে ইহ্সানের গুণসম্পন্ন মুু'মিন, মুসলিম, মুত্তাকী ও মুহ্সিন হতে পারলে আমাদের সমাজ হবে শান্তি, নিরাপত্তার এবং ইহ্সানের সুন্দর সমাজ। 


লেখকঃঃ খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।                                                                                    


               


                                 

          

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন