সুন্দর কথা কল্যাণকর, মন্দ কথা অনিষ্টের মূল।

কথা হলো মুখের ভাষা বা বাক্য। কথার প্রধান দু'টি দিক আছেঃ সুন্দর কথা, অসুন্দর কথা; ভালো কথা ও মন্দ কথা। যিনি সুন্দর কথা বলেন, আমরা তাকে বলি সুভাষী, মিষ্টভাষী। শ্রেষ্ঠ মনীষীরা সুভাষী। তাঁরা সুন্দর কথা বলেন, সুন্দর করে বলেন। অনেক মানুষ অসুন্দর কথা বলে। মন্দ কথা শুনে। অসুন্দর কথা মানে- কটুকথা, অশ্লীল কথা, বাজে কথা। মন্দ কথায় কোনো লাভ নেই। উপকার নেই। এতে ক্ষতি আছে। এতে পাপ আছে।



মন্দ কথা যবান নষ্ট করে, ব্যক্তিত্ব বিলীন করে, মন ও চরিত্রকে কলুষিত করে। মন্দ কথা বন্ধুত্ব নষ্ট করে, মানুষের সাথে সম্পর্কহানি করে। এমনকি মানুষ তার শত্রু হয়ে যায়। মন্দ কথা মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। মহানবী (সাঃ) বলেছেনঃ "ভাষার ফসলই মানুষকে জাহান্নামে উপুড় করে নিক্ষেপ করবে।" -(তিরমিজি শরীফ)। মন্দ কথা অনেক অনেক অনিষ্টের মূল। মন্দ কথা সমাজে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাই মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল মানুষকে মন্দ কথা বলতে মানা করেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ "মানুষ মন্দ কথা বলে বেড়াক, তা আল্লাহ পছন্দ করেননা।" 
-( সূরা নিসাঃ১৪৮)। 


"তাদেরকে 'উহ্' পর্যন্ত বলোনা এবং ধমক দিয়ে কথা বলোনা।" -( সূরা বনী ইসরাইলঃ২৩)।
"মিথ্যা কথা বলা থেকে আত্মরক্ষা করো।" -( সূরা হজ্জঃ ৩০)। মহানবী (সাঃ) বলেছেনঃ "কোনো কটুভাষী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।" -(আবু দউদ শরীফ)। "মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী।" - (বুখারী ও মুসলিম)। এছাড়াও আরো অনেক হাদীস আছে। তাই মন্দ কথা থেকে বিরত থাকা ঈমানী দায়িত্ব। 


মন্দ কথায় মানুষ অসন্তুষ্ট হয়, বেজার হয়, মনোকষ্ট পায়। সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। আত্মীয়তা ছিন্ন হয়। শত্রুতা সৃষ্টি হয়। মান ইজ্জত নষ্ট হয়। অশান্তি ও অস্হিরতা সৃষ্টি হয়। মন্দ কথা থেকে সাহাবায়ে কেরাম কঠোর ভাবে আত্মরক্ষা করতেন। তাই মন্দ কথা ছাড়তে হবে, সুন্দর কথাই বলতে হবে। আল্লাহ তা'আলা সুন্দর কথা বলার তাকিদ দিয়ে বলেঃ "মানুষের সাথে ভালো কথা বলো, সুন্দর কথা বলো।"-( সূরা বাক্বরাঃ৮৩)।  " তাদের সঙ্গে সন্মানের সাথে কথা বলো।" -( সূরা বনী ইসরাইলঃ২৩)। "স্পষ্ট সোজাসুজি ও সন্মানজনক কথা বলো।"-( সূরা আহযাবঃ৩২)। 



মহানবী (সাঃ)  বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন- Allah is beautiful and he loves beauty. তিনি সুন্দর কথাকেই পছন্দ করেন আর অসুন্দর কথাকে করেন ঘৃণা। আমরাও আল্লাহ তা'আলার রঙ ধারণ করি! সুন্দর কথা বলি! মানুষের যতো সেরা গুণ আছে, তন্মধ্যে অন্যতম হলো সুন্দর করে কথা বলার গুণ। সুন্দর কথায় রাগ নিভে যায়, গোস্বা দমে যায়। হতাশা, নিরাশা, দুশ্চিন্তা দূর হয়। স্নেহ, ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। 



সুন্দর কথা বলার জন্যে চাই সুন্দর মন। অসুন্দর মন থেকে সুন্দর কথা বেরোয়না। কারণ, কথা তো মনোভাবেরই প্রকাশ! তাই মনকে সুন্দর করতে হবে আগে। আদর্শকে প্রচার, প্রসার ও বিজয়ী করার জন্যে অবশ্য সুভাষী হতে হবে। আসুন আমরা সবাই সুভাষী হই! আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রব। 


লেখকঃ খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা। 








একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন