সীরাতুন্নবী ও মিলাদুন্নবী সাঃ। খতীব আব্দুচ্ছালাম বাগেরহাটী, পিলখানা, ঢাকা।

রবিউল আউয়াল মাস শুরু হয়েছে। মুহাক্কিক ঐতিহাসিকরা বলেছেনঃ রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ ১২ই রবিউল আউয়াল-এই সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ নিয়ে এই মতবিরোধ হওয়ার কারণ হল, তাঁর জন্ম তারিখ শুরু থেকে লিখে রাখা হয়নি এবং কেউ গুরুত্ব সহকারে সেটা মনেও রাখেনি। সে যুগে জন্ম দিবস কেউ পালন করতোও না। রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম দিবসও সাহাবায়ে কেরাম পালন করতেন না। 

বলা হয় যে, ১২ই রবিউল আউয়াল রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ। কিন্তু মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরাম এবং মুহাক্কিক ঐতিহাসিকগণ বলেছন রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ ১২ই রবিউল আউয়াল নয়, ৮ই রবিউল আউয়াল। কেউ কেউ বলেছেন ৯ই রবিউল আউয়াল। 

রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ ১২ই রবিউল আউয়াল কিনা তা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। তবে ১২ ই রবিউল আউয়াল তারিখেই রাসূল (সাঃ)-এর ওফাত হয়েছে অর্থাৎ, এই তারিখেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন - এ ব্যাপারে কারও মতবিরোধ নেই। তাই ১২ই রবিউল আউয়াল রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম তারিখ কি না তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এই তারিখটাই যে তাঁর মৃত্যুর তারিখ তা নিশ্চিত। 

মিলাদুন্নবী শব্দের অর্থ নবীর জন্ম। নিঃসন্দেহে রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম আমাদের জন্য খুশির বিষয়। ১২ই রবিউল আউয়াল বা এই মাসে কেউ কেউ মীলাদ অনুষ্ঠান করে থাকেন। মীলাদ অনুষ্ঠান যদি সহীহ্ ভাবে হয়, তাহলে তা অত্যন্ত বরকতের অনুষ্ঠান। 

সহীহ্ তরীকায় মীলাদ অনুষ্ঠান হল- যে অনুষ্ঠানে রাসূল (সাঃ)-এর জন্ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, রাসূল (সাঃ)-এর জন্মের সময় যে সব অলৌকিক ঘটনাবলী প্রকাশ পেয়েছিল নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত থেকে সেগুলো বর্ণনা করা হবে, রাসূল (সাঃ)-এর মো'জেযা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, রাসূল (সাঃ)-এর শৈশব কাল সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, রাসূল (সাঃ)-এর সীরাত সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

এগুলো আলোচনার দ্বারা আমাদের ঈমান মজবুত হবে, রাসূল (সাঃ)-এর প্রতি ভক্তি ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে, রাসূল (সাঃ)-এর আদর্শ গ্রহণের অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হবে। অতএব এরকম মীলাদ মাহ্ফিল নিঃসন্দেহে উত্তম। 

এরূপ মীলাদ মাহফিল শুধু রবিউল আউয়াল মাসেই বা রবিউল আউয়াল মাসর ১২ তারিখেই করতে হব- এমন নির্দিষ্ট করা ঠিক নয়। এরূপ অনুষ্ঠান সারা বৎসরের সব সময়ই করা যায়। 

রাসূল (সাঃ)-এর সীরাততো সারা বছর আলোচনার বিষয়। রাসূল (সাঃ) হলেন জীবন্ত কুরআন। কুরআনই ছিল রাসূল (সাঃ)-এর চরিত্র এবং আদর্শ। তাই সীরাত আলোচনার মাহফিলে রহমত বরকত নিযিল হয়।  

হে আল্লাহ, তোমার প্রেম ও তোমার রাসূলের প্রেম আমাদেরকে নসীব কর। রাসূলের সুন্নাতের এত্তেবা করার তাওফীক দান কর। -আমীন।                                                                                                                                                                                           

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন